নীলিমাদের বাড়িতে আজ ঈদের দিনের মতো আনন্দ। কারণ অনেক দিন পর ঢাকা থেকে নীলিমার বড় ভাই বাড়িতে আসবে। নীলিমা ও হুমায়ূন তাদের বাবা-মার দুই সন্তান। ওদের বাড়ি বাংলাদেশের উত্তরের জেলাগুলোর অন্যতম কুড়িগ্রাম জেলার ভূরঙ্গামারি উপজেলার সদর থেকে একটু এগোলেই গুদের ৰাড়ি। ওদের বাবা জয়নাল মিয়া মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে চাকরি করেন। নীলিমা এ বছর অষ্টম শ্রেণিতে উঠেছে। ইতিপূর্বে সে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষাতে বৃত্তি পেয়েছিল। তাই ভালো শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রামের সবাই নীলিমাকে পছন্দ করে। নীলিমার ভাই হুমায়ূনও ভালো শিক্ষার্থী। যে বছর হুমায়ুন ঢাকায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হয়, সে বছর ওদের উপজেলা থেকে সেই একমাত্র শিক্ষার্থী ছিল যে বুয়েটে পড়ার সুযোগ পায়। হুমায়ূন এখন ঢাকার একটি বেসরকারি সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি করে। বাড়িতে নীলিমা ও নীলিমার মায়ের সঙ্গে ওদের দাদা ও দাদি থাকেন।
হুমায়ূন আসবে জেনে হুমায়ূনের বাবা গতকালই মধ্যপ্রাচ্য থেকে নীলিমার মায়ের মোবাইল ফোনে টাকা পাঠিয়েছেন। কাল দুপুরেই মা বাজারে গিয়ে টাকা নিয়ে এসেছেন আর সঙ্গে অনেক বাজার। আজ সকাল থেকে মা আর দাদি মিলে রান্না করছে। নীলিমার দাদা পত্রিকায় পড়েছেন যে বিসিএস পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে হুমায়ূন যদি বাড়ি আসে তাহলে সে কীভাবে উদ্ভ পরীক্ষার জন্য দরখাস্ত করবে, বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত হলেন।
সকাল থেকে দাদা নীলিমাকে শুনিয়েছে কেমন করে তিনি নিজের চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলেন। হেঁটে হেঁটে নদীর ঘাটে যাওয়া, সেখান থেকে নৌকা করে আর পায়ে হেঁটে কুড়িগ্রাম শহরে যাওয়া, সেখানে দরখাস্ত টাইপ করা, তারপর সেটি পাঠানো। কত কাজ।
অবশ্য দাদার উৎকণ্ঠা দেখে নীলিমা তেমন ভয় পাচ্ছে না। গত রাতে সে ভাইয়ার কাছ থেকে জেনেছে, তাদের বাড়িতে বসেই ভাইয়া ঐ আবেদন করতে পারবে। নীলিমা অবশ্য তার দাদাকে এ কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে যে তার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষার ফলাফল আনার জন্য দাদাকে কুড়িগ্রাম শহরে যেতে হয়নি। মার মোবাইল ফোনেই পরীক্ষার ফলাফল জেনেছিল।
বাড়িতে ঢুকে হুমায়ূন প্রথমেই তার দাদাকে আশ্বস্ত করল যে তার ল্যাপটপ আর মডেমের সাহায্যে ইন্টারনেটে প্রবেশের মাধ্যমে সে বাড়িতে বসেই আবেদনটি করতে পারবে। শুধু তাই নয়, তার ঢাকা ফিরে যাওয়ার ট্রেনের টিকেট কিনতেও কাউকে আর স্টেশনে গিরে লাইনে দাঁড়াতে হবে না।
রাতে খাওয়াদাওয়ার পর হুমায়ূন তার ল্যাপটপের সঙ্গে মডেমটি লাগিয়ে নিল। তারপর আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করল। এবার সবাইকে নিয়ে চলে গেল এক নতুন দুনিয়ায়, যেখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কেমন করে পৃথিবীকে নানাভাবে বদলে দিচ্ছে।
দলগত কাজ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব উল্লেখ করে আকর্ষণীয়ভাবে একটি পোস্টার ডিজাইন কর। |
---|
Read more